জনি ভাই ও মিয়া আপার লক ডাউনের ঢাকা আসার গল্প ও মিয়া আপার সাথে ঘুরতে যাওয়া




 চারিদিকে মাস্ক ছাড়া পারছে না কেউ বের হতে। এত কাপড় পড়তে হচ্ছে সবাইকে। টুপি, মাস্ক, জামা, প্যান্ট জুতা সব। অনেকে তো হাতে মোজাও পড়ে নিচ্ছেন। এমন সময় সারা বিশ্বে যখন লকডাউন তখন আমাদের প্রিয় জনি দাদা খুজতে লাগলেন এমন একটি জায়গা যেখানে গেলে একটু খালি গায়ে লুঙ্গী পড়ে হাটা যাবে। মাস্ক পড়তে হবে না। কিছু না হলেও চলবে। তখন আমাদের পাশের ফ্লাটের টিকটক কুইন মিয়া আপার সাথে জনি ভাইয়ের যোগাযোগ হয়। মিয়া আপা ভালোই জনপ্রিয়। টিকটকে তার অনেক ফলোয়ার। আর সব সময় এগুলি নিয়েই মিয়া আপা বিজি থাকেন। তার একটি বউদি আছে। বউদি আর মিয়া আপা এক সাথে থাকে। তো জনি ভাই ঠিক করলেন ঢাকা আসবেন। মিয়া আপার সাথে যোগাযোগ করে সব ফিক্স করলেন কবে আসবেন কোই থাকবেন ইত্যাদি। ও হ্যাঁ মিয়া আপা আমাকে ছোট ভাই হিসেবে খুব স্নেহ করেন। সেই হিসেবে আপার সাথে আমার ভালোই সম্পর্ক।

বিশেষ টিকটক অনুষ্ঠানে আমাকে ডাকে। ট্রিট দেয় আর মাঝে মাঝে আপার আমাকে রেস্টুরেন্টেও খেতে নিয়ে যায়। তো আমার উপরে বিশাল একটা দায়িত্ব চাপিয়ে দিলে মিয়া আপা। জনি ভাই আসছেন তাকে নিয়ে আসতে হবে। আর আমাদের যে ফাকা রুমটা আছে সেখানে তাকে রাখতে হবে। তো কি আর করারা বড় আপার কথা রাজি না হলে কি চলে। মিয়া আপার কথা মত আমি গেলাম সকালে এয়ারপোর্টে। ঢাকা ওইদিন প্রচুর জ্যাম। আমি দেখলাম একটা টাক মাথার লোক এদিকে আসতে। প্রথমে চিনি নাই। অনেক কষ্টে বুঝলাম এটা সেই বিখ্যাত জনি ভাই। মিয়া আপার কথা মত তাকে আমার ঘরে নিয়ে আসলাম। রুমে থাকতে দিলাম কিছু খাবার খাইয়ে রেস্ট নিতে বললাম। অনেক দূর থেকে এসেছে তো তাই অনেক ক্লান্ত জনি ভাই। ওই দিন মিয়া আপার সাথে দেখা করাই নাই। আর হ্যাঁ আপা আমার সাথে যেমন ভাই বোনের সম্পর্ক হলেও বাইরের ছেলেদের মোটেও পাত্তা দেন না। তিনি এক জন টিকটকার। সবাই চান্স খুঁজে তার পিছে কিন্তু পায় না। যাই হোক আপা আমাকে চুপি চুপি ডেকে কিছু প্লান করলাম আমরা। পরের দিন আপাকে নিয়ে আমি খেতে যাই একটি হাসপাতালে। আপার দাঁতে একটু সমস্যা আছে। তো কি করা যায়। নাম করা একজন ডাক্তারের কাছে যাই। আমরা বের হই সকালেই। আমার বাসায় আমি আর আমার ভাই ছিল আর কিছু বন্ধু ছিল। বাবা মা কিছুদিনের জন্যে গ্রামের বাড়িতে গেছেন। তাই আমি এখন ফুল মাস্তিতে আছি বাড়িতে। ফাকা বাড়ি আর নতুন অতিথি। তো জনি ভাইকে বন্ধু আর ভাইয়ের কাছে রেখে চলে আসি ডাক্তারে কাছে। বর্তমান যা অবস্থা দেশের সবার মুখে মাস্ক পড়া। তো আমরা জ্যাম এর ভেতর দিয়ে এক সময় কিভাবে যেন হাসপাতালে পৌঁছে গেলাম। আমরা নেমে সিরিয়াল দিতে গেলাম। এত দিন একজন বৃদ্ধা নিতো সিরিয়াল আজ দেখলাম নতুন একজন। ওমা লোকটাও দেখি টাক। তবে জিম করা ফিগার। আর মুখটা দেখি নি কেননা মুখে মাস্ক ছিল। কেমন যেন চেনা চেনা লাগছিল। তারপর গেলাম ডাক্তারের কাছে। কাজ শেষ করে আমরা ঠিক করি পাশের কোথাও খেতে যাব। নতুন একটি ট্যাক্সি ডাকি। ওমা সেই ট্যাক্সির ড্রাইভারও দেখি টাক। আর মুখে মাস্ক। যেন কিছুক্ষণ আগে সিরিয়াল দেওয়া লোকটির মত। যদিও ট্যাক্সিওয়ালার কাপড় আর হাসপাতালের লোকটির ড্রেস সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। যাই হোক আমি সামনে বসি আর আপাকে পিছনে বসাই। ভালো একটি দোকানে খেতে গেলাম। মিয়া আপু আমাকে যা ট্রিট দেন প্রায় সবই তার টিকটক থেকে আয় করা টাকা। রেস্টুরেন্টে বসে আছি অনেক সময় কেউ আসে না। হথাৎ এক টাক মাথার লোক এসে অর্ডার নিয়ে গেল। এটাও অবাক লেগেছে আমার। সেইম ফিগার সেইম লুক। মাস্ক এর জন্যে দেখতে পারি নি মুখ। তারপর একটা ঘটনা ঘটলো। রেস্টুরেন্টের পাশের ভবনে আগুন ধরে গেল। কিছুক্ষণ পড় ফায়ার ব্রিগেড চলে আসে। তারপর দেখি আমাদের এখানেও একজন খোজ নিতে আসে পাশের ভবন তো তাই কোন সমস্যা হচ্ছে কি না আমাদের। তাই আমরাও একটি নিরাপদ অনুভব করি। মজার বিষয় হচ্ছে সেই ফায়ার ব্রিগেডের লোকটিও ছিল টাক। তিনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারও বটে। ভবন চেক করতে এসেছিলেন কতটা নিরাপদ তাই। খাওয়া শেষ হলে নিচে নামতেই একজন উকিলের সাথে দেখা সেও টাক। একই রকম দেখতে। তারপর আমরা বাসায় ফিরি দেখি জনি ভাই টিভি দেখছেন একা একা। তাকে দেখে মনে পড়লো সিনেমার গল্পের মত। কখনো ডাক্তার, কখনো ড্রাইভার, কখনো ফায়ার ব্রিগেড, কখনো ইঞ্জিনিয়ার আবার কখনো বা উকিল অনেক গুলি ক্যারেক্টার একসাথে দেখলাম আজকে। সারাদিন বাইরে ছিলাম তাই খুব ক্লান্ত আজ। ঘুমিয়ে গেলাম। প্লান করলাম যে পরের দিন জনি ভাইয়ের সাথে মিয়া আপার দেখা করিয়ে দেব।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url