স্মার্টফোনটি দ্রুত চার্জ দেওয়ার ১০টি অব্যর্থ কৌশল ও টিপস।

শুরুতে একটু কল্পনা করুন তো, আজ আপনার অফিসে কোন জরুরী মিটিং আছে অথবা আপনি কোথাও ঘুরতে বের হবেন সকালে। অথচ সকাল ঘুম থেকে উঠে দেখলেন যে আপনার মোবাইলে চার্জ নেই। ভাবুন তো কেমন হবে ব্যাপারটা? মোবাইলে দ্রুত চার্জ দেয়ার উপায় কী? আর আপনার তৈরি হওয়ার সময় কতটুকুই বা চার্জ হবে মোবাইলটি! আমরা সবাই কম বেশি এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় যে স্বাভাবিকের চেয়ে মোবাইলটি চার্জ হতে বেশি সময় নেয়। আমরা তবুঝতে পারি না যে ঠিক কী কারণে বা কেন ধীর গতিতে মোবাইলটি চার্জ হয়। আর ধীর গতিতে ফোন চার্জ হওয়ার কারণ ও সমস্যাটি সমাধানের কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করব এখানে। আর দ্রুত স্মার্টফোন চার্জ করার কিছু টিপস জেনে রাখলে তো ক্ষতি নেই। তাহলে চলুন জেনে নিই ফোন দ্রুত চার্জ করার কিছু টিপস কৌশল! কৌশলগুলি ফলো করলে অবশ্যই ভালো ফল পাবেন।


মোবাইল দ্রুত চার্জ দেওয়ার দশটি টিপস


যাচাই করুন আপনার চার্জিং অ্যাডাপ্টরটিঃ

অনেক সময় চার্জিং অ্যাডাপ্টরের সক্ষমতা কমে যায়। আর বর্তমান বাজার অনুযায়ী ফোন কোম্পানিগুলি মোবাইলটির সাথে এক, দুই অথবা তিন অ্যাম্পিয়ার ক্ষমতার চার্জার প্রদান করে। সাধারণ হিসাবে ১ অ্যাম্পিয়ারের চার্জার গড়ে ৭০০-৮৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার হারে, ২ অ্যাম্পিয়ারের চার্জার গড়ে ১৫০০-১৬০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার হারে ও ৩ অ্যাম্পিয়ারের চার্জার গড়ে ২৫০০-২৬০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার হারে মোবাইলটির ব্যাটারিকে চার্জ করে। মোবাইলটির  চার্জিংয়ের হার কেমন হবে একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেখে নিতে পারেন। ‘অ্যাম্পিয়ার’ নামের এই অ্যাপ গুগল প্লের এই ঠিকানা হতে ইন্সটল করে নেয়া যাবে। চার্জিং স্লো অনুভূত হলে তাই এই অ্যাপ দ্বারা চার্জের হার জেনে নেয়া যেতে পারে। আর যদি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হারে চার্জ হয় তবে আপনার মোবাইল ফোনটির চার্জার পরিবর্তন করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন।


সব সময় নিজস্ব চার্জার ব্যবহার করাঃ

ফোনে চার্জ দেওয়ার সময় নিজস্ব চার্জার বিশেষ করে মোবাইলটির সঙ্গে থাকা আসল চার্জারটি ব্যবহার করুন। মোবাইল ফোনে মাইক্রো ইউএসবি পোর্টে অনেক চার্জার সমর্থন করতে পারে। তবে আসল চার্জার ব্যবহার না করলে আস্তে আস্তে ব্যাটারির চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতা কমতে থাকে।


সস্তা চার্জারকে না বলাঃ

অপরিচিত কোম্পানির তৈরি মোবাইল চার্জার ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। কারণ এ ধরনের চার্জারে কোনো নিরাপত্তাপদ্ধতি নেই। ফলে আপনার মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত চার্জ বা মোবাইলটি গরম হয়ে যেতে পারে। আর অ্যাডাপ্টারে সমস্যা দেখা দিলে মোবাইল ও ব্যাটারি উভয়ই নষ্ট হতে পারে।


উপযুক্ত চার্জার বাছাই করাঃ

দ্রুত চার্জ করতে আপনার মোবাইলটির সর্বোচ্চ চার্জিং ক্যাপাসিটি অনুযায়ী চার্জার কিনতে হবে। সাধারণত বেশি ওয়াটের চার্জারগুলোর দামও কিন্তু একটু বেশি হয়ে থাকে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় যে মোবাইলটি বেশি ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং সমর্থন করলেও কোম্পানিগুলি খরচ বাঁচাতে কম ওয়াটের নরমাল চার্জার দেয়। এক্ষেত্রে ফোনের ম্যাক্সিমাম ক্যাপাসিটি না জেনে আপনি যদি সেটি দিয়েই ফোন চার্জ তখন তো কখনো দ্রুত চার্জ করতে পারবে না। তাই আপনার মোবাইল ফোনটির মডেল অনুযায়ী ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখে নিন মোবাইলটি ঠিক কত ওয়াটের চার্জার সাপোর্ট করে, আর আপনি ব্যবহার করছেন কত ওয়াটের চার্জার।


ব্যাটারি পরিবর্তন করাঃ

অনেক সময় চার্জার কিংবা ক্যাবল ঠিক থাকে কিন্তু ব্যাটারির সমস্যার কারণে চার্জ ধীর গতিতে হতে পারে। এক্ষেত্রে চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়া এবং মোবাইলটি গরম হওয়া অথবা অস্বাভাবিক হারে চার্জের পরিমাণ কম বেশি হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ব্যাটারি পরিবর্তন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে।


চার্জিং পোর্টে সমস্যাঃ

অনেক সময় চার্জিং পোর্টে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তখন আপনার চার্জার ঠিকভাবে সংযোগ না পাওয়ার কারণেও কিন্তু চার্জিং প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফলে ফোন ধীর গতিতে চার্জ হতে থাকে আর তাই আপনাকে তখন অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টার থেকে চার্জিং পোর্টটি সারিয়ে নিতে হবে।


চার্জের সময় সুরক্ষা কেসটি খুলে রাখাঃ

অনেকেই মোবাইলের বাড়তি সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের কেসিং ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু চার্জ দেওয়ার সময় কেসিংটি খুলে রাখালে ভালো হয়। সাধারণত মোবাইলে চার্জ দিলে ব্যাটারি কিছুটা গরম হয়ে থাকে। কিন্তু ফোনের কেসিং থাকলে তাপ আটকে মোবাইলটি অতিরিক্ত গরম হয়।


ওয়াল সকেট ব্যবহার করাঃ

জলদি চার্জিং এর জন্য অবশ্যই চার্জার ওয়াল আউটলেটে লাগাতে পারেন। এখানে আপনি ভালো কারেন্ট ফ্লো পাবেন। পাওয়ারব্যাঙ্ক বা কম্পিউটার থেকে চার্জ করতে গেলে আপনি হয়ত সর্বোচ্চ চার্জিং স্পিড পাবেন না।  আর এগুলো শুধুমাত্র বিশেষ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা উচিত। একইভাবে ওয়্যারলেস চার্জার ব্যবহার করার চেয়ে আপনি ক্যাবল দিয়ে চার্জ করলেই দ্রুত চার্জ করতে পারবেন। তবে বর্তমানে বাজারে অনেক ফাস্ট চার্জিং সমর্থিত ওয়্যারলেস চার্জার পাওয়া যায়।


মোবাইল বন্ধ করে চার্জ দিনঃ

ফোনটি দ্রুত চার্জ দেওয়ার জন্যে এটা খুব কার্যকরী একটি পদ্ধতি। কোথাও বেরোবার আগে এই পদ্ধতিতে চার্জ দিতে পারেন। আর হ্যাঁ অনেক মোবাইলে এয়ারপ্লেন মোড নামে একটি অপশন আছে। সেটাও ব্যবহার করতে পারেন।


সারা রাত চার্জ দিবেন নাঃ

সারা রাত ফোন চার্জ দেওয়া উচিত নয়। এতে অতিরিক্ত চার্জ আপনার মোবাইলের ব্যাটারির ক্ষতি করে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url