অণুগল্প - পরিবর্তন ( আমাদের সবার ভাবনাগুলি যদি এমন হত! )
রমিজ মিয়া আর তার স্ত্রী একমাত্র মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলো। ডাক্তার কিছুক্ষণ দেখার পরে একটি প্রেসক্রিপশন দিয়ে দিলেন। বের হওয়ার সময় জানতে পারলো ডাক্তারের ফি পাঁচশ টাকা দেওয়া লাগবে। টাকার কথা শুনে রমিজ মিয়া চিন্তায় পড়ে গেলেন। হাতে আছে মাত্র পাঁচশ টাকা।
ভাড়ায় একটা রিকশা চালাই। তা দিয়েই কোনোরকম পেট চালাচ্ছে। মেয়ে তিনদিন ধরে জ্বরে ভুগছে। পরপর তিনদিন কিস্তি দিয়ে একটা টাকাও হাতে ছিলো না মেয়েকে চিকিৎসা করানোর জন্য। আজকে সকালে বের হওয়ার সময় নিয়ত করে বের হয়েছিলো যেকোনো প্রকারে আজকে টাকা জোগাড় করে মেয়েকে ডাক্তার দেখাবে। সন্ধ্যায় যখন ঘরে গেল তখন দেখলো মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ। হাতে যা টাকা ছিলো তাই নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলো।
রমিজ মিয়া পার্কিং থেকে তার রিকশাটা বের করলো আর সাথে সাথে একটা প্যাসেঞ্জার পেয়ে গেলেন।
এতোক্ষণের কথা গুলো প্যাসেঞ্জার শুনে তার কাছে থাকা চারশো টাকা রমিজ মিয়ার হাতে গুঁজে দিয়ে বললেন, "এই বাড়িতেই আমি থাকি। টাকা ফেরত দিয়ে যাবেন কিন্তু মনে করে।"
রমিজ মিয়ার স্ত্রী মেয়েকে ওষুধ খাওয়াচ্ছে। তিনি সামনের চেয়ারটায় বসে তা দেখছে আর ভাবছে, "লোকটা নিজের নেশার সামগ্রী না কিনে টাকাটা আমাকে দিয়ে দিয়েছে। আল্লাহ তাকে সে পথ থেকে ফিরে আসার তাওফিক দান করুক।"
রমিজ মিয়া টাকা ফেরত দিতে গেলে তাকে লোকটি বলল, "টাকা দিয়ে আমি নেশার জিনিস কিনতাম। জানেন! আপনার কথা গুলো শুনে আমি নেশা করা ছেড়ে দিয়েছি। আমার এই নেশার টাকায় যদি কারো জীবন বাঁচাতে পারি তাহলে আমি কেন নেশা করে করে শুধু শুধু টাকা অপচয় করবো! এখন থেকে আমি ওই টাকা দিয়ে গরীব অসহায় লোকদের সাহায্য করবো।"
লেখা - মোহাম্মদ নুরুল আজিম চয়ন