চিন্তামূলক গল্পঃ ডিভোর্সি মেয়ে ও একটি ভাবনা

সব ঠিকঠাক ছিলো,কিন্তু মেয়েটা ডিভোর্সি!

ডিভোর্সি শোনা মাত্রই ছেলের পরিবার আর কথা বাড়ায়নি।এখানেই শেষ করে দিয়েছে।ডিভোর্সি মেয়েকে বিয়ে করাবে?সমাজের লোক জানলে পরিবারের মাথা কাটা যাবে।কোন মতেই ডিভোর্সি মেয়ে বিয়ে করানো যাবেনা।

ডিভোর্সি মেয়েকে রিজেক্ট করে অন্য জায়গায় মেয়ে দেখা হচ্ছে।সেখানেও সব ঠিকঠিক, শুনেছে মেয়ের নাকি একটা সম্পর্ক ছিলো।

আরেহ,ঐগুলো ব্যাপার না।বিয়ের আগে এখনকার ছেলে মেয়েরা এসব ভুল করেই।পছন্দের কেউ থাকতেই পারে।এটা সমস্যা না।ছেলের পরিবার রাজি এখানেই বিয়ে করাবে।


কিন্তু ডিভোর্সি মেয়ের আশপাশ দিয়েও যাওয়া যাবেনা।
কিন্তু এই মেয়েটা যে তার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে রুমডেটে যায়নি,তার কি গ্যারান্টি?কোন গ্যারান্টি নাই।কারণ কেউ জানেনা সেটা।এতে কোন সমস্যা নেই।

কিন্তু ডিভোর্সি মেয়ের কথা মাথায় আনতেই আমাদের মাথা কাটা যায়! আরেহ মেয়েটা ডিভোর্সি।

আসেন একটা গল্প শোনাই:

আমি তখন ঢাকায়,একটা মেয়ে ২-৩ দিন যাবৎ আমার একটা পেজে মেসেজ দিচ্ছে।একটা সলিউশন নেয়ার জন্যে।ফ্রী হয়ে রাতে রিপ্লে দিলাম।

সমস্যা কি জানতে চায়লে বললো ৪ বছরের সম্পর্ক ছিলো তাদের এখন আর ছেলে পাত্তা দেয় না।ছেলেটা এখন ভালো চাকরি করে।মেয়েটাকে বলে দিয়েছে,বিয়ে করে নাও।সে আর তার প্রতি ইন্টারেস্টেড না।

প্রশ্ন করেছিলাম শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে? আমি উত্তর শোনে অবাক,না হলেও ২০ বার।এই টুকু শোনার পর যে কেউ বলতে পারবে ছেলের আর বিয়ে করার আগ্রহ থাকবে না,এটাই স্বাভাবিক।

এখন কার দোষ, কার দোষ নেই।এই বিষয় টানতে যাচ্ছিনা।এই গুলো এখন মামলি ব্যাপার,আমরা এটাকে মেনেই নিয়েছি,সম্পর্কে গেলে এসব হবেই।

কেনো এসব করে এইগুলো বলতে গেলে একটা বই লিখা যাবে।সে দিকে যাচ্ছিনা।

আমার কথা হলো আমাদের ডিভোর্সি মেয়েদের নিয়ে এত সমস্যা কেনো?এদের কথা শুনতেই আমাদের গলা শুকিয়ে যায় কেনো?এই ক্ষেত্রে আমি কিংবা আমার পরিবারেও কিন্তু এর বাহিরে না।

ডিভোর্সি মেয়েরাটা যে সম্পর্কে ছিল,ঐটা হালাল আর বৈধ্য একটা সম্পর্ক তারপরও আমরা ডিভোর্সি কথা শুনলেই চোখ কপালে তুলে নিই।

কিন্তু বিয়ের আগে মেয়ের অন্য সম্পর্ক মেনে নিই।
যেই সম্পর্কে আজকাল বেশিরভাগই হারাম কাজ হচ্ছে।আমি সব মেয়ের কথা বলছি না।কিন্তু আজকাল সম্পর্ক বিষয়টিতে ৭০% এরকমই হয়।

তারপরও এখানে আমাদের সমস্যা নেই।যত সমস্যা ডিভোর্সি মেয়ের ক্ষেত্রে।এটা আমি আপনি বা আমার আপনার পরিবারই এরকম সমাজ সৃষ্টি করে দিয়েছে।

অথচ নিজের মেয়ের বেলা?ডিভোর্সি হলে সমস্যা নেই।কিন্তু ডিভোর্সি মেয়েকে নিজের ছেলের বউ বানানো যাবে না।কি একটা সমাজ তৈরি করলাম আমরা।

কিন্তু মেয়েটার কি দোষ এখানে? হয়তো ছেলেটার সাথে মনের মিল হয়নি,হয়তো ছেলেটা নেশাখোর বা অন্য খারাপ চরিত্রের ছিল বলে ডিভোর্স দিয়েছে।

অন্তত হারাম জন মানবের আড়ালে হারাম কোন সম্পরেকে তো জয়ানি?তাদের থেকে তো সে বেটার নাকি?

আসুন এই ডিভোর্সি নামক শব্দটা শোনে হীনমন্যতা ভোগা থেকে বিরত থাকি!আসুন আমরা আমাদের চিন্ত ভাবনায় পরিবর্তন আনি।সমাজ টাকে বদলানোর চেষ্টা করি।

সাবস্ক্রাইব করুন:

Niloy Ahmed
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url