গল্পঃ ভুতের ভয়ে অজ্ঞান

ভার্সিটির শেষ বর্ষে একটা মেসে থাকতাম।চিলেকোঠা, মানে ছাদের পাশেই একটা ফ্ল্যাট তিনটা রুম । প্রায় সময়েই কফির মগ হাতে রাতে আড্ডা দিতাম। এরকমই এক রাতে কফি হাতে সবাই আড্ডা দিচ্ছিলাম এই কথা সেই কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। কথার প্রসঙ্গে হটাৎ জীন , পরীর আলোচনা শুরু হয়। যার যেমন শোনা কাহিনী আছে সবাই বলছে। যখন আমার পালা আসল আমি একটা কাহিনী শুরু করলাম। আমাদের এলাকার এক বড় ভাইয়ের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা। ভাইয়ের নাম ফয়সাল।

২০০৪ সালের বন্যার সময় ফয়সাল ভাই ইশার নামাজ পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। এক বৃদ্ধ লোক তাকে সাথে নিয়ে যেতে আবদার করে। কারণ বৃদ্ধের কাছে লাইট ছিলনা। দুইজন একসাথে চলছিল , টুকটাক কথা হচ্ছিল। হটাৎ ফয়সাল ভাইয়ের স্যান্ডেলের ফিতা খুলে যায়। উনি ফিতা ঠিক করার জন্য যেই নিচের দিকে তাকাল দেখল উনার সাথে বৃদ্ধ লোকটার পায়ের গোঁড়ালি নেই। উনি ভাবলেন অন্ধকারে ঠিক মত দেখতে পাচ্ছেন না । উঠে হাটা দিলেন। কিন্তু মনে একটু সন্দেহ লাগছিল। তাই একটু পেছনে গিয়ে ওই লোকের পায়ে লাইট ধরল। দেখল আসলেই লোকটার পায়ের গোঁড়ালি নেই। কিন্তু লোকটা দিব্বি হেটে চলে যাচ্ছে, কোন প্রকার স্ট্রেচার ছাড়া। আরো লক্ষ্য করল লোকটা হাটছে কিন্তু লুঙ্গি নাড়াচাড়া করছেন না। সিম্পলি একটা গোল শেপ নিয়ে আছে লুঙ্গিটা। ফয়সাল ভাই পেছন থেকে লোকটার পায়ের দিকে লক্ষ্য করছিল , হটাৎ লোকটার ডাকে উপরের দিকে তাকাল। দেখল লোকটা উনার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু লোকটার গলা , বুক সামনের দিকে আর শুধু মুখটা উনার দিকে। এই অবস্থা দেখে তিনি এক চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে পরে যায়।

যখন জ্ঞান ফিরে তখন উনি হুজুরের রুমে শোয়ে আছে। আব্বাও ছিলেন তখন।

গল্প শেষ করার পর দেখি একজন আরেকজনের পায়ের দিকে নজর দিচ্ছে। হটাৎ শুভ চিৎকার করে উঠল, মেহেদির পা নেই। শুভর চিৎকারে মেহেদী নিজেই অজ্ঞান হয়ে পরে যাচ্ছিল । ধরা ধরি করে ওকে রুমে নিয়ে শোয়ে দিলাম। আর সবাই শুভকে বকাবকি করছে। মেহেদির রুমমেট ছিল রাহুল। আমরা সবাই রুম থেকে চলে আসছিলাম, রাহুল বলল সে একা মেহেদির সাথে থাকতে পারবে না। অগত্যা সবাই একরুমে একসাথে শোতে হল। হটাৎ বোতলে পানির ভরার শব্দে শুভ বলল কে পানি ভরছিস আমারেও একটু দিস। সুজন বলল, কেউ পানি ভরছেন , রাহুল সাহেব পানি ছাড়ছে। সবাই হাসাহাসি করছিল এমন সময় ফয়সাল চোঁখ খুলল। দেখল রাহুল উল্টা দিকে বসে ফয়সালের দিকে তাকিয়ে আছে। এই অবস্থা দেখে ফয়সাল ঠোট কাঁপিয়ে আবার জ্ঞান হারাল।

by Najib Abdullah
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url