দূরে থাকার গল্প



আমি প্রেমে পড়েছি।আমি তাকে আমার ভালবাসার কথা জানাতে চাই।সোজা ইংলিশে আমি তাকে প্রপোজ করতে চাই।সমস্যাটা বাঁধলো এখানেই-আমি তাকে নিয়ে inferiority complex এ ভুগি।আর কেনই বা ভুগব না-সে আমাদের একজন ক্যাম্পাস স্টার-ভার্সিটির যেকোন অনুষ্ঠানেই সে মঞ্চে উঠে নাটক করে,গান গায়,আবৃত্তি করে!আর আমি-আমি কলুর বলদের মত খেটে খেটে স্টেজ বানাই,মঞ্চ সাজাই!আমার মধ্যে এই ধরনের কোয়ালিটি নাই।যেমন ধরেন,অর সাথে আমার প্রথম যেদিন দেখা হয়(মানে কথা হয় আর কি!)-আমি ওকে জিগ্যেস করলাম-“তোমার বাড়ি কই?”।ও বলল-“ctg”| “ctg” যে চট্টগ্রাম কে বোঝায়-এটা বুঝতেই আমার পাক্কা দুই মিনিট সময় লেগে গেল।She is far more smart than me.আমি তাই ওর সামনে দাঁড়াতে ভয় পাই।বেফাঁস আমি যদি ওকে কোন কথা বলে ফেল অথবা ও যদি আমার মনের কথা জেনে ফেলে!!

আমার এ অবস্থার জন্যে আমি মোটেও দায়ী না।বিশ্বাস হচ্ছে না!না হবারই কথা। আপনারা তো আর আমাকে চিনেন না,চেনা শুরু করছেন কেবল গল্পের শুরু থেকে মাত্র।আমি সবসময় self-confident guy,কখনও কখনও হয়তো over confident – কিন্তু কখনই inferiority complex এ ভুগি নাই।সব দোষ আমার বন্ধুটার।আমার বন্ধু,থাক এই গল্পে সে এই পরিচয়েই থাক।আমি এমন একজন মানুষ ছিলাম যে কাজ করার pre-sequence আর post-sequence নিয়ে কখনই ভাবি নাই।The Dark Knight খ্যাত জোকার এর মত,I just do things।কিন্তু আমার এই বন্ধুটা আবার বেশি ভাবে।কাজ করার আগে কি,করলে কি হবে এসব ভাবতে থাকে এবং ভাবতে ভাবতে কখনও কখনও কাজ করার উপযুক্ত সময়টাও শেষ করে ফেলে।এর বলির পাঁঠাও আমি।Sorry,আমি না-আমার বাছুর প্রেম।বুঝলেন না-টিনএজ প্রেমে এর গালভরা সুন্দর ইংলিশ নাম আছে-“calf love”.আমি তার বাংলা করলাম এই যা!আর সেই মেয়েটি আমাদের পুনর্মিলনী তে দুর্ভাগ্যক্রমে আমার মুখমুখি বসে ন্যাঁকা ন্যাঁকা স্বরে বলতে থাকে তার পাশের জনকে,”আর বলিস না,ও কে যে কি মিস করি আমার ভীষণ কান্না পায়,কেন যে ও এতো দূরে থেকে!”-আমার তখন কেমন লাগে বলেন!!সব ওই মাথামোটাটার দোষ।আমাদের mutual friend হিসেবে ও যদি আরেকটু active হত তাইলে হয়তো এই মেয়েটা হয়তো অন্য কোন সময় অন্য কোন জায়গাই বসে আমার কথা এই ভাবেই ভাবতো!
আমার মধ্যে ওর মাথামোটাগিরি এসে ভর করেছে।তাইতো আমি এখন বসে বসে inferiority complex মাড়াচ্ছি!নাইলে কবেই কতকিছু করে ফেলতাম-হয় এস্পার নয় ওস্পার।এই দিকে অর কথা ভাবতে ভাবতে তো আমার পরিচিত জগত চলে যাচ্ছে রসাতলে।আমার কল্পনা ওকে নিয়ে-সেদিন রাতে তো ওকে স্বপ্নে দেখলাম ওকে বিয়ে করে...থাক এ নিয়ে আর কিছু বলা যাবে না।স্বপ্নের কথা বলে বলতে হয় না।(মানিক বন্দ্যোপধ্যায় এর একটা কথা এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে গেল,”প্রেম বেসিদিন বাঁচে না,বাঁচলে মানুষ বেশিদিন বাঁচতো না,মানুষ তার সব কাজকর্ম বন্ধ করে দিত।”আমি এখন এর ঠেলা বুঝতেছি!!)
তবে আরও বড় সমস্যা হল-আমি যেকোন সমস্যায় পড়লে আমার এই মাথামোটা বন্ধুটাকেই আগে বলি-old habit dies hard.যথারীতি আমি আমার মাথামোটা বন্ধুটাকে আবার সব খুলে বললাম।এই সময় ও-মানে যার প্রেমে আমি এখন হাবুডুবু খাচ্ছি সে আমাকে খুদেবার্তা পাঠালো মোবাইলে।এরকম সেটা “Good noon.sry,I was sleeping.ki koris?”
আপনারা নিশ্চয়ই উল্লসিত হয়ে পড়ছেন,কাহিনী শেষ!যেই মেয়ে ঘুম থেকে উঠে সরি বলে মেসেজ দেয়-তাইলে তো...
ঝামেলা তো এখানেই।দেশের ভিতরেই প্রবাসী জীবন যাপন করি।ঈদের বন্ধে ঢাকায় এসেছি-হেসে খেল প্রত্যেকটা দিন পার করছি-প্রতিটা দিনই আমার কাছে ঈদের মত!এমনি এক ঈদের রাতে ও আমাকে প্রথম নক করলো।খুদেবার্তা টা এরকম,”hlw dst ki khbr?valo achis?vctn kmn kattese?”টিনের চালে কাক-আমি ত অবাক।ওর সাথে আমার এখন পর্যন্ত মাত্র তিন দিন কথা হয়েছে,শেষ দিন আমি ওর ফোন নাম্বার নেই কারন ওর কাছে থেকে কিছু মুভি নিব এবং আমি আরও কিছু মুভি ও কে দিব।ওই রাতেই আমার সাথে ওর মেসেজিং হয়,কোন মুভি কেমন এইটা নিয়ে।এতদিন পর হুট করে ওর কাছ থেকে আওয়াজ পেলে তো আকাশ না মহাকাশ থেকে পড়ার কথা!
মাথামোটা বন্ধুটা যথারীতি কিছু টিপস দিল-সাথে সাথেই sms এর reply দেয়া যাবে না!একটু পর সে দিল মিসড কল;মাথামোটা বন্ধুটা বলল,”খবরদার ফোন দিবি না,sms এর reply দিবি না এখন”।এইদিকে আমার তো হাঁসফাঁস লেগে গেল।কিন্তু কি আর করার-উপদেশে ঢেকি গেলা।বাসায় চলে আসলাম যখন তখন বিকেল।আমার চোখে সরষে ফুল দেখার কথা-দেখছি ও কে।আর থাকতে না পেরে আমি ফোন দিলাম।ও ফোনের লাইন কেটে দিল।সাথে সাথে আমার মাথামোটা বন্ধুটাকে ফোন দিলাম।তার ভাবের জবাব,”hmmm,she has got an attitude”.আমি আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ফোন দিলাম,এবার সে ফোন ধরলো-আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই সে বলতে লাগলো,”আমি বই পরছিলাম;বই পড়ার সময় ফোন ধরি না।সরি।কিন্তু তোরটা ধরা লাগতো-তুই তো জানিস না তাই”।আমি তো হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।জানতে চাইলাম কি বই পড়ছিল।সে বলল হুমায়ূন আহমদ এর “রংপেন্সিল”।আমি ওকে বললাম যে তাঁর “জলজ্যোছনা”বইটা আমি যতবারই পরি-মনে হয় বইটা আমার লেখার কথা।তাই আমি উপন্যাসটা নিজের মত করে আবার লিখেছি।
সাধারণত মেয়েরা এইসব ক্ষেত্রে ন্যাকামিতে গদগদ হয়ে আমার লেখাটা পড়তে চায়।সে ওসব কিছুর ধার ধারলো না।কথা শেষ করে ফোন রাখলাম।
আমি সন্ধ্যার পর তাকে আবার খুদেবার্তা পাঠালাম।সে কোন প্রত্যুত্তর করলো না।আমার মনে হল সে হয়তো আবার কোন বই নিয়ে ব্যস্ত।রাত ১০ টার দিকে আমার বহুল আকাংখিত জবাব আসলো।সেটা এরকম,”oi,joljosna ta porlam…kmn jno lagtese..monta udas hoye gelo…:O”।আমি তাকে হুমায়ূন আহমদ এর “রজনী” বইটা পড়তে বললাম।বইটা তার কাছে নাই-আমি পিডিএফ টা মেইল করে দিলাম।
অনেক রাতে ওর ফোন আসল।রাত কয়টা আমি জানি না কারণ আমি প্রায় ঘুম এমন সময়।ও কাঁদছে।আমার যতটা অবাক হবার কথা তার থেকেও বেশি অবাক হলাম।অবাক হলাম এ জন্যে যে একটা মানুষ এতো সুন্দর করে কাঁদতে পারে-ওর সমস্ত আবেগ ওর কান্নার শব্দে ঝরে পরছিল।রজনী উপন্যাসের এক জায়গায় নায়ক নায়িকার থুতু ফেলা দেখে তার প্রেমে পড়ে যায় বলে নায়কের এক বন্ধু বলে।আমার মনে হলো ওর এই অকৃত্তিম আবেগের স্ফূরণ দেখে আমি না যে কেউ ওর প্রেমে পড়ে যাবে,ওর চোখের পানি মুছে দিতে চাইবে।আমি কি বলব বুঝতেছি না।হঠাৎ করে মন থেকে বের হয়ে আসলো কথাগুলোঃ
“I was a child and she was a child
In this kingdom by the see
But we loved with a love that was more than love
I and my Annabel Lee”
ও নিজেকে সামলে নিল।ও কবিতার শেষ দুই লাইনের কথা বললঃ
“oh my darling-my darling-my life and my bride
In this sepulchre there by the see
In her tomb by the surrounding”
আমি মনে মনে কবিতার লাইন গুলো মনে করলাম।হুম,আমি জানি-ওকে বলাম।ও বলতে লাগলো-এ জন্যেই আমি মানুষ কে ভালবাসি না,মানুষকে ভালবাসতে ভয় পাই।উপরওয়ালা মানুষকে সুখী দেখতে চায় না,ভালবাসার জিনিসগুলো একে একে পরীক্ষার নাম করে কেড়ে নিয়ে যায়।আমি উপরওয়ালাকে আমার সাথে এ খেলা খেলতে দিব না,তাই কোন কিছুই ভালবাসি না।এই কারণেই প্রতিনিয়তই আমি আমার চারপাশকে বদলে ফেলি যখনই দেখি চারপাশের কেউ আমাকে বিশ্বাস করে খুব বেশি অথবা আমি কাউকে খুব বেশি বিশ্বাস করা শুরু করি।আমি এই কারণে দোস্ত বলি সবাইকে,friend শব্দটা অনেক বেশি ভারি শব্দ-সবাই এর ভার বইতে পারে না।দোস্ত হাল্কা একটা শব্দ-মুছে ফেলতেও কষ্ট হয় না!
আমি আগেই বলেছি,আমি inferiority complex এ ভুগি,তাই প্রত্যুত্তর করতে পারলাম না।নাইলে আমি ওকে বলতাম,কবিতার আসল কথাগুলোই তুমি ধরতে পার নাই,তুমি নিজের দূর্বলতা ঢাকতে এড়িয়ে গিয়েছ-
“But our love-it was stronger by far than the love
Of those who were older than we
Of many wiser than we-
And neither the angels in heaven above
Nor the demons down under the see
Can ever dissever my soul from the soul
Of the beautiful Annabel Lee”
কবিতার আসল কথা এই ভালবাসা-যা থেকেই মানব সভ্যতার যাত্রা শুরু।নাইলে ধরাধামে পতিত হবার পর আদি মানবের কোন ঠেকা ছিল না যে সে পুরা পৃথিবী ঘুরে আদি মানবী কে খুঁজে বের করে।তাকে ভালবাসতো বলেই তো সভ্যতার শুরু।আমি এই কথাগুলো বলতে পুরাপুরি ব্যার্থ হলাম।আমি যেটা করলাম তা কাপুরুষতা।আমি তাকে বললাম,
“Let the blow fall soon or late
Let what will be over me
Give me the face of the earth around
And the road before me
Wealth I seek not hope nor love
Nor a friend to know me”
আমি কাপুরুষের মত তার অভিনয়বৃত্তি উষ্কায় দিলাম।ও এতক্ষণে হাসল।“A perfect definition for me” ও হাসতে হাসতে বলল।রবার্ট লুইস এর vagabond কবিতা-আমাকে খুব সুন্দর কর ডিফাইন করে কথাগুলো,সে বলল।
আমার নিজের ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।আমি মানুষের ভালবাসায় আস্থা আমার খুব বেশি-কেউ যখন এটাকে হেলায় অবজ্ঞা করে-তাকে আমার খুব নীচু শ্রেণির মানুষ বলে মনে হয়।আমার কেন যেন মনে হল সে আমার সাথে আর কখন যোগাযোগ করবে না-কেননা আমি তাকে ধরে ফেলেছি।আমার মধ্যে এখন ego কাজ করা শুরু করল।আমি তাকে আমাকে শেষ কথা বলতে দিব না,আমি বলবো।ও কথা শুরু করার আগেই আমি বলা শুরু করলাম,”bye my dear amigo,have a nice sleep, let not the bug bite you”।সে কিছু একটা বলতে গেল-আমি তাকে থামিয়ে দিলাম।তাকে বললাম আমি আক্ষরিক ভাবেই কথাগুলো বলেছি,বলে আমি ফোন রেখে দিলাম।
তারপর কি হল!এরপর আমাদের আর কখনো কথা হয় নাই,কোন মেসেজিং হয় নাই।আমার এ কথাগুলো শুনে আমার মাথামোটা বন্ধুর মাথাই হাত।তার মতে আমার কপাল চাপড়ানো উচিত।কিরোর হাত দেখার বই পড়ে আমি কিছুটা হাত দেখতে পারি-আমার হাত রাক্ষস গোত্রের প্রতিনিধিত্ব করে।মানুষ হিসেবে আমি তৃতীয় শ্রেণির-হীনমন্যতা থাকবে,স্বার্থপরতা থাকবে।আমার সব কার্যক্রম হবে আমাক ঘিরে।এই কথাগুলো আমি কখনোও বিশ্বাস করি নাই।কিন্তু এখন মিথ্যা বলে মনে হচ্ছে না।
সাবস্ক্রাইব করুন:


শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে বলিলাম:
‘একদিন এমন সময় আবার আসিয়ো তুমি,
আসিবার ইচ্ছা যদি হয়!– পঁচিশ বছর পরে!’
এই বলে ফিরে আমি আসিলাম ঘরে;
তারপর কতবার চাঁদ আর তারা,
মাঠে মাঠে মরে গেল,
ইদুর — পেচাঁরা জোছনায় ধানক্ষেতে খুঁজে এল-গেল।
চোখ বুজে কতবার ডানে আর বায়ে পড়িল ঘুমায়ে কত-কেউ!
রহিলাম জেগে আমি একা
নক্ষত্র যে বেগে ছুটিছে আকাশে
তার চেয়ে আগে চলে আসে যদিও সময়
পঁচিশ বছর তবু কই শেষ হয়!

জীবনানন্দ দাশের এই কবিতাটা কয়েকদিন ধরে মাথার ভিতর ঘুরছে,আমি কখন ভাবি নাই খুব প্রিয় কেউ যে বলে যায় যে অনেক দিন পর হয়তো আসবে,তার সাথে দেখা হলে কি বলা যায়।


ভার্সিটিতে।অনেক ব্যস্ত জীবন চলছে।কারো জন্য থেমে থাকার অবকাশ নাই।ওর কথা মনে পড়ে-মনে পড়ে না।মাঝে মাঝে মনে হয়-প্রেম একাকীত্বের সঙ্গী-অলসের বিলাসযাপন।
ভার্সিটি জীবনের অনন্য একটা মজা,রোমাঞ্চ হল বাসে চড়া।বাস ছেড়ে যাচ্ছে-দৌড়াতে দৌড়াতে বাসের হাতল ধরে ঝুলে পড়ার মত মজা আর হয় না।অনেকটা adventure হিসেবেই দেখে ছেলে-মেয়েরা।এই বিষয়ে আমার নিজস্ব একটা ব্যখ্যা আছে।বাসের দরজা ধরে ঝুলতে ঝুলতে আমি সেই ব্যাখ্যার কথাই ভাবছি।যদি কখনও বিখ্যাত কেউ হই তাইলে তো আমার ব্যাখ্যা quote করা হবে হয়তো কোথাও।আগে থেকে ঠিক করে ফেলি।
বাস ছেড়ে দিয়েছে।আস্তে আস্তে এর গতি বাড়ছে।হাতল ধরে পুরা শরীর বাইরে বের করে দিলাম দরজা দিয়ে-আমার খুব প্রিয় একটা কাজ।হঠাত করে শুনি কে যেন বাস থামাতে বলছে।আমি ঘুরে দেখি সে বাসে উঠার জন্যে দৌড়াচ্ছে।বাসের গতি সময়ের সাথে সাথে বাড়চে।আমি হাত বাড়িএ দিলাম-তাকে ধরে তান দিয়ে বাসে উঠায় নিলাম।তার মুখে একটা আত্মতৃপ্তির হাসির রেখা খেলে গেল।আমি তাকে বলতে লাগলাম,”বাঙ্গালী টিনএজরা বাসে চড়া তা কে adventure হিসেবে দেখে।বাস যখন থেমে থাকে-চরার নাম নাই।বাস যখন গড়ানো শুরু করে ওরাও দৌড়ান শুরু করেতখন অদের মুখে থাকে চিন্তার বলিরেখা।যদি সে বাস মিস করে তখন মাথা নিচু করে আস্তে করে ধূর শালা বলে গাকি দেই আর আড়চোখে আশেপাশে তাকিএ দেখে তার এই পরজয়ের স্বাক্ষী কে কে!আর যদি বাসে উঠে পড়তে পারে তাইলে তো...। ”
সে জিজ্ঞেস করল কি?
আমি অসমাপ্ত কথা জের ধরে বললাম,তোমার মত একটা হাসি দেয়।
সে বিড় বিড় করে আমাকে উদ্দেশ্য করে কি যেন বলতে লাগলো।আমার এমনি দূর্ভাগ্য যে তা শুনতে পারলাম না।বেরসিক বাস ড্রাইভারটা প্রচণ্ড জোরে তার হাইড্রোলিক হর্ণটা বাজায়।আমার কেন জানি মনে হয় সে কি বলতে চাচ্ছে আমি ঠিক বুঝতে পারছি-সে তার টলায়মান একাকীত্বের দেয়াল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে-আর একটু হলেই তা পুরোপুরি ভেঙ্গে যাবে।সে এই নিয়ে ভীত।
আমি বাসের ভীড়ে নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে লাগলাম;মিশে যেতে থাকলাম মানুষের মাঝে।সে এক ধরণের অবাক আর নির্মোহ দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে যেন এমনি হবার কথা ছিল।এমনি হবার কথা ছিল-দুইজন দুইজনের চোখের ভাষা বুঝলেও হাত ধরার কখন সাহস করতে পারব না।আমি রাক্ষস শ্রেণীর মানুষ-অহমিকা রাগ আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে।সে দেবগণের শ্রেনীভুক্ত।হাত ধরে তাকে উঠানোর সময় দেখলাম তার কনিষ্ঠ আঙ্গুল তার অনামিকা আঙ্গুলের প্রায় সমান।ওর ভিতর সূক্ষ একটা অহঙ্কারবোধ থাকবে যে কারণেই সে কখন আমার কাছে নেমে আসতে পারবে না।
বাস চলতে থাকলো।

সাবস্ক্রাইব করুন:

By- Ferdous Hridoy
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url