গল্পঃ জীন যখন ছাত্র

গল্পটা আসলে আমার এক ভাইয়ের কাছ থেকে শোনা। ওরা দুই আপন ভাই হাফিজি মাদ্রাসার ছাত্র। তারা ওই মাদ্রাসায় প্রায় তিন বছর যাবত লেখা পড়া করতেছে। হঠাৎই তাদের মাদ্রাসায় অদ্ভুত ধরনের দুই ছাত্র আসলো।
তাদের চেহারায় কেমন অদ্ভুত। তারা অন্য সকল ছাত্রদের থেকে আলাদা। অন্য সকল ছাত্ররা যখন খেতে যায় তাদের লজিং বাড়িতে এই দুজন ছাত্র তখন বাজারে খেতে যায়।
মাদ্রাসা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে বাজার। মাদ্রাসা থেকে বাজারে যেতে প্রায় ৩০ মিনিটের মত সময় লাগে এদিকে অন্য সকল ছাত্রদের লজিং বাড়ি থেকে
খেয়ে আসতে প্রায় ৩০- ৩৫ মিনিট সময় লাগে।

আবার অন্য ছাত্ররা যখন খেলাধুলা করে তখন ওরা দুজন হয় ছাদে গিয়ে না, হয় অন্য কোথাও চলে যাই। কিন্তু তারা যে কোথায় যায় সেটা কেউ জানেনা? ছাদে গেলে মাঝে মাঝে ওদের দেখা যায়। আবার মাদ্রাসার বড় হুজুর সবাইকে বলে দিয়েছে কারো যদি রাত দশটার পরে বাইরে যাওয়ার খুব বেশি দরকার হয়, তাহলে সে যেন সাথে আরো একজন নিয়ে যায় কিন্তু সব সময় তারা দুজনেই যাই সাথে অন্য কাউকে নেয় না।

একদিন রাতে হঠাৎ ওরা দুই ভাই টয়লেটের জন্য বাহিরে যাবে। তাও রাত্রে বারোটার পর যখন ওরা দুই ভাই বাহিরে গেল তার কিছুক্ষণ আগে ওই দুজনকে মসজিদ এর মাঝে দেখে গিয়েছিল। কিন্তু যখন তারা টয়লেটের কাছে গেল তখন ওই জায়গায় যেয়ে দেখে ওই দুইজন ওই খানে দাঁড়িয়ে আছে। দুই ভাই একটু অবাক হল কেননা তাদেরকে কিছুক্ষণ আগে মাদ্রাসার ভিতরে পড়তে দিকে গিয়েছিল, কিন্তু যখন তারা আবারও টয়লেটের কাছে গেলো তখন সেখানেও ওই দুইজন। আর একটু অবাক হওয়ারই কথা, কি করে তারা দুই ভাইয়ের আগেই টয়লেটে গিয়ে পৌঁছালো।

তখন আমার এক ভাই বলল তোমাদেরকে মাত্রই না মাদ্রাসায় দেখে আসলাম পড়তেছে এখন কি করে এখানে আসলা। তখন ওরা দুইজন কোন কথা না বলেই মাদ্রাসায় চলে আসলো।
যখন সকাল হল তখন এক ভাই বলল, কাল রাত কি করে এটা সম্ভব হয়েছিল তখন ওরা বলল এটা কাউকে বলো না কিন্তু আমার ভাই বলল কেন বলবা না? তখন ওরা দুইজন বলল আমরা মানুষ না আমরা জীন জাতি এদের দুজনের কথা শুনে তখন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। তারপর ওদের কাজকর্ম ধীরে ধীরে মানুষ থেকে ভিন্ন রকম মনে হয়। যেখানে মসজিদ থেকে বাজারে যেতে ৩০-৩৫মিনিট সময় লাগে আর তারা সেখানে যেয়ে ৩০-৩৫ মিনিটের ভেতর কেমন করে খেয়ে আবার চলে আসে এটা নিয়ে সকল ছাত্রদের মনে সংশয় আবার রাতে কেনইবা তারা দুইজন একটার পরে বাহিরে যায়। সকল ছাত্রদের মধ্যে এ নিয়ে কানাকানি তখন কথাটা বড় হুজুর পর্যন্ত গেল
তখন তাদের বড় হুজুর বলল আজ আমরা না ঘুমিয়ে দেখব ওরা কোথায় যায়। রাত ১২-৩০ সবার মনে কিছুটা ভয় তারপরও ওরা আসলে কি তা জানার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
রাত প্রায় ১ টার কাছাকাছি ওদের বিছানা থেকে আলোর মত কি যেন একটা মাদ্রাসা দরজার মধ্য দিয়ে বেরিয়ে গেল কিন্তু তারপরও তাদের বিছানায় কে যেন শুয়ে আছে তখন বড় হুজুর সহ ওরা সকলে উঠে তার বিছানায় গিয়ে কম্বল দিয়ে চেপে ধরল। কিছুক্ষণ পর কম্বল যখন উঠল তার ভিতরে কোন কিছুই নেই সবাই অবাক তারা সবাই মনে মনে বলল ওদের দেহ দুইটি কেমনে উধাও হলো।
তার পর থেকে তাদের এই মাদ্রাসায় আর দেখা যায় নি।

সাবস্ক্রাইব করুন:

লেখা - উমর ফারুক

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url